একটা নির্দিষ্ট পরিমান আয় অতিক্রম করলেই তাকে আয়কর দিতে হবে। ব্যক্তি শ্রেণী হিসেবে এই আয়ের সীমা ভিন্ন। প্রতি বছর জুলাই-জুন অর্থ বছরে কারো যদি সেই নির্দিষ্ট পরিমান আয়ের সীমা অতিক্রম করে তাহলে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
অনেকেই আয়কর রিটার্ন-এ কি কি তথ্য দিতে হয় তা জানেন না। না জানার কারনে অনেকেই ভয় পান। এবং এ কারণেই হয়তো তথ্য গোপনও করে থাকেন। কিন্তু ঠিকমত জানলে খুব সহজভাবেই আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।
প্রথম কথা হলো আপনাকে কর দিতে হবে সারা বছর ধরে আপনি যে যে খাত থেকে আয় করেছেন তার উপর। তবে সম্পূর্ণ আয়ের উপর আপনাকে কর দিতে হবে না।
যেমন, আপনি যদি চাকুরীজীবি হোন তাহলে কিছু কিছু অনুমোদনযোগ্য ব্যয় বাদ দিয়ে বাকি যা থাকবে তা করযোগ্য হবে। আপনাকে সেই করযোগ্য আয়ের উপরই কর দিতে হবে।
আবার, কেউ যদি ব্যবসা করেন তাহলে সারা বছর ব্যবসা থেকে যে আয় হয়েছে তা থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে মুনাফা বের করতে হয়। কেবলমাত্র সেই মুনাফার উপরই একজন ব্যবসায়ীকে কর দিতে হয়।
আয়কর রিটার্নে মোট দশটি খাতের কথা বলা হয়েছে। এই দশটি খাত থেকে আয় হলে তা করযোগ্য হবে। সেই দশটি খাত হলোঃ
০১। বেতনাদি
০২। নিরাপত্তা জামানতের উপর সুদ
০৩। গৃহ সম্পত্তির আয়
০৪। কৃষি আয়
০৫। ব্যবসা বা পেশার আয়
০৬। মূলধনী লাভ
০৭। অন্যান্য উৎস হইতে আয়
০৮। ফার্ম বা ব্যক্তিসংঘের আয়ের অংশ
০৯। অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান, স্ত্রী স্বামীর আয়
১০। বিদেশ হইতে আয়
উপরের এই দশটি খাতের মধ্যে যে কোন একটি খাত থেকেও যদি আপনার আয় থাকে এবং সেই আয় সারা বছর ধরে আয়কর আইনে বেধে দেওয়া সীমা অতিক্রম করে তাহলেই আপনাকে কর দিতে হবে।
আর আপনাকে কর দিতে হলে আয়কর বিবরণী জমা দিতে হবে। প্রতি বছরই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আয়কর রিটার্ন কিভাবে পূরণ করতে হবে তার উপর একটি নির্দেশিকা বের করে। সেখানে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা আছে।
এখন আপনি জানলেন আয়ের খাতগুলো সম্পর্কে। আয়ের বিবরণ দেওয়ার পাশাপাশি আপনাকে আয়কর বিবরণীতে ব্যয়ের বিবরণও জমা দিতে হয় যেটা জীবনযাপন সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের বিবরণী নামে পরিচিত।
এই বিবরণীতে আপনি সারা বছর ধরে পরিবার পরিচালনার জন্য যে ব্যয়গুলো করেছেন তার হিসেব দিতে হয়।
যেমন, খাদ্য, বস্ত্র, বাড়ি ভাড়া, গাড়ি থাকলে তার জন্য খরচের পরিমান, ইউটিলিটি বিল, সন্তানদের পড়ালেখার খরচ ইত্যাদি।
এর বাইরে আমরা বিশেষ ধরনের ব্যয় করে থাকি। এর মধ্যে রয়েছে উৎসব, উপহার, দেশে বা দেশের বাইরে ভ্রমণ, অনুদান, মানবিক সহায়তা ইত্যাদি।
আর আপনার করযোগ্য আয়ের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে কর হিসেবে যা দিয়েছেন। এর সবই আপনাকে উল্লেখ করতে হবে।
এখানে হয়তো লক্ষ্য করেছেন, আপনার সারা বছর ধরে যে আয় হবে তা থেকেই আপনি খরচ করেছেন। এবং বছর শেষে আপনার আয় থেকে ব্যয় বাদ দিলেই আপনার হাতে বছর শেষে কতো আয় আছে তা বের হয়ে আসবে। এটা আবার উল্লেখ করতে হয় পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণীতে।
পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণীতে আপনি কোথায় কোথায় কতো টাকার সম্পদ কিনেছেন তা উল্লেখ করতে হয়। আবার যদি আপনি কারো কাছ থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন তাও এখানে উল্লেখ করতে হয়।
তাহলে বুঝতে পারলেন আপনার আয়-ব্যয়, সম্পদ-দায় এর কোনো কিছুই আয়কর বিবরনী থেকে বাদ যায় না।
এই সব বিষয়গুলোই আয়, সম্পদ, দায়, খরচ আপনি সহজে জানতে এবং হিসাব করতে পারবেন bdtax.com.bd– ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে।
জসীম উদ্দিন রাসেল
একজন ব্যক্তি শিক্ষকতা ও ব্যবসা করতে পারবে কি?
অবশ্যই পাড়বে। কিন্তু আয়কর প্রস্তুত করার সময় তাকে শিক্ষকতা এবং ব্যবসা দুই আয়ই দেখাতে হবে। ধন্যবাদ।
আমি সৌদি আরবে প্রবাসী ছিলাম, ২০১৩ ইং দেশে ফিরে আসি, তিন বছর দেশে ছিলাম সেই সময় ব্যাবসা শুরু করে সফল হতে পারি নাই, আবার ২০১৫ ইং তে কাতার চলে যায়, দেশে আমার যা সম্পদ আছে তাতে কিছু ইনকাম হয় একই সাথে আমার খরচ ইনকাম থেকে বেশী, এই অবস্থায় আমাকে কি ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন দিতে হবে?
টিন থাকলে রিটার্ন জমা দিতে হবে। আর আপনি আপনার টিন বাতিল করতে চাইলে এণবিআর এর সাথে যোগাযোগ করুণ। ধন্যবাদ ।