আমরা অনেকেই করযোগ্য আয়কর রিটার্ন এবং জিরো বা শূন্য আয়কর রিটার্নের পার্থক্য বুঝি না। আবার অনেকেই জিরো বা শূন্য আয়কর রিটার্নে কোনো টাকা আয়কর বাবদ দিতে হবে কিনা সে বিষয়ে স্বচ্ছ ধারনা নেই। মূলত জিরো বা শূন্য আয়কর রিটার্ন হলো সেই আয়কর রিটার্ন যেখানে ব্যক্তিকে শুধুমাত্র আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। কিন্তু কোনো প্রকার টাকা বা অর্থ আয়কর বাবদ প্রদান করতে হয় না।
কোনো ব্যক্তির যদি ই-টিন থাকে এবং তার আয় যদি করমুক্ত আয় সীমার ভিতরে হয়ে থাকে, তাহলে তিনি জিরো বা শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন। ব্যক্তি বিশেষে করমুক্ত আয়ের সীমা ভিন্ন হয়ে থাকে। তাহলে চলুন জেনে নেই ব্যক্তি বিশেষে করমুক্ত আয়ের সীমাগুলো কি কি –
১. পুরুষ করদাতার ক্ষেত্রে বাৎসরিক করযোগ্য আয় ৩,০০,০০০ টাকা বা তার কম।
২. মহিলা করদাতা, ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতা, তৃতীয় লিঙ্গের করদাতার ক্ষেত্রে বাৎসরিক করযোগ্য আয় ৩,৫০,০০০ টাকা বা তার কম।
৩. গেজেটেড যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার ক্ষেত্রে বাৎসরিক করযোগ্য আয় ৪,৭৫,০০০ টাকা বা তার কম।
৪. প্রতিবন্ধী করদাতার ক্ষেত্রে বাৎসরিক করযোগ্য আয় ৪,৫০,০০০ টাকা বা তার কম।
অতএব, কোনো ব্যক্তির বাৎসরিক করযোগ্য আয় যদি উপরোক্ত করমুক্ত আয় সীমার মধ্যে হয়ে থাকে এবং তার যদি ই-টিন থাকে তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই জিরো বা শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এমনকি কোনো ব্যক্তির যদি ই-টিন থাকে কিন্তু কোনো আয় না থাকে তাহলেও তাকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। তবে কোনো ব্যক্তির বাৎসরিক করযোগ্য আয় যদি করমুক্ত আয় সীমার মধ্যে হয়ে থাকে এবং তার যদি ই-টিন না থাকে তাহলে তাকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে না।
ই-টিন থাকলেই ব্যক্তি করদাতাকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম আছে। সেগুলো হলো –
১. যদি কোনো ব্যক্তি ক্রেডিট কার্ডের জন্যে ই-টিন নিয়ে থাকেন এবং তার আয় করমুক্ত আয় সীমার মধ্যে হয়ে থাকে।
২. যদি কোনো ব্যক্তি জমি বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ই-টিন নিয়ে থাকেন এবং তার আয় করমুক্ত আয় সীমার মধ্যে হয়ে থাকে।
৩. যদি কোনো ব্যক্তি একজন অনাবাসী হন যার বাংলাদেশে কোন নির্দিষ্ট কোনো ফিক্সড বেস নেই।
তবে কোনো ব্যক্তি যদি উপরোক্ত শর্ত পূরণের পরেও স্বপ্রনোদিতভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে চান, তাহলে তিনি তা করতে পারবেন।
যে কোনো ব্যক্তি তার জিরো বা শূন্য আয়কর রিটার্ন বিডি ট্যাক্সের স্বয়ংক্রিয় সফটওয়ারের মাধ্যমে খুব সহজেই প্রস্তুত করতে পারবেন। এছাড়া একটি স্বচ্ছ এবং নির্ভুল জিরো বা শূন্য আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতের জন্যে বিডি ট্যাক্সের অভিজ্ঞ ট্যাক্স কনসালটেন্টদের দ্বারা জিরো বা শূন্য আয়কর রিটার্নটি মূল্যায়ন বা রিভিউ করিয়ে নিতে পারবেন। এতে করে আয়কর রিটার্নে ভূল থাকার সম্ভবনা অনেক কমে যাবে।
লেখক:
সাজ্জাদ হোসেন শরীফ, এমবিএ, পিজিডিএফআইএ, সিএফএস
Leave A Comment