সাধারনভাবে বলতে গেলে আয় যতো বাড়বে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে করের পরিমানও ততো বাড়বে। বাংলাদেশে প্রগ্রেসিভ করনীতি ফলো করা হয়। অর্থাৎ, আয় বাড়লে করের বোঝাও ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে।
এবারের বাজেট থেকে হয়তো জেনেছেন, আয়কর মুক্ত সীমা বিগত বাজেটের মতই রাখা হয়েছে। অর্থাৎ করের হার ৫% থেকে শুরু হবে।
যাই হোক, যদি কোন ব্যক্তির তিন লাখ টাকা পর্যন্ত করযোগ্য আয় থাকে তাহলে তাকে কোন কর দিতে হবে না। কিন্তু এই সীমা অতিক্রম করলেই তাকে কর দিতে হবে।
বাজেট অনুযায়ী, তিন লাখ টাকা করযোগ্য আয় অতিক্রম করার পর প্রথম এক লাখ টাকা পর্যন্ত ৫%, তার পরবর্তী তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ১০%, তার পরবর্তী চার লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫%, তার পরবর্তী পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০% এবং অবশিষ্ট টাকার উপর ২৫%।
উপরে লক্ষ্য করুন, করযোগ্য আয়ের পরিমান যতো বৃদ্ধি পাচ্ছে করের হার ততো বেড়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ, তাকে বেশি পরিমানে কর দিতে হচ্ছে।
বাজেটে উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের জন্য পূর্বের মতই সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যেটা নিয়ে সমালোচনা করছেন অনেকেই। সেটা হলো, আগে একজন ব্যক্তি করদাতা সর্বোচ্চ ৩০% কর দিতেন। এখন সেটা বাতিল করে সর্বোচ্চ হার ২৫% করা হয়েছে। এর ফলে উচ্চবিত্তরা বড় ধরনের একটা সুবিধা পাবেন।
তবে যারা চাকরি করেন তাদের বেতনের পরিমান যতো বাড়তে থাকে তাদের একদিকে যেমন উপরে বললাম সেই অনুযায়ী ধাপে ধাপে করের পরিমান বাড়তে থাকবে। আবার অন্য দিকে, চাকরিজীবী করদাতারা তাদের বেতন থেকে যে আয় পেয়ে থাকেন তার কিছু কিছু খাত একটা নির্দিষ্ট পরিমান করমুক্ত সুবিধা রয়েছে। যেমন, বাড়ি ভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা ইত্যাদি।
এসব খাতে একটা সীমা বেধে দেয়া হয়েছে। এর উপরে গেলে আর সুবিধা পাওয়া যায়না। যেমন, বাড়ি ভাড়া ভাতা সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা। চিকিৎসা ভাতা এক লাখ বিশ হাজার টাকা। যাতায়াত ভাতা ত্রিশ হাজার টাকা।
এর ফলে যারা বেতন কম পান তারা দেখা যায়, উল্লেখিত খাতে প্রায় পুরোটাই কর অব্যাহতি পেয়ে যান। কিন্তু যাদের বেতন বেশি তারা কিন্তু উল্লেখিত সীমার বেশি সুবিধা পাচ্ছেন না। অতএব, উচ্চ বেতনভোগী করদাতারা একদিকে যেমন কম সুবিধা পাচ্ছেন যার কারনে তাদের করযোগ্য আয়ের পরিমান বেড়ে যাচ্ছে, আবার তেমনি করযোগ্য আয়ের পরিমান বেড়ে যাওয়াতে তাদের করের পরিমান অন্যদিকে বেড়ে যাচ্ছে। তারা দুইদিক থেকেই চাপে আছেন।
চাকরীজীবী করদাতাদের জন্য উপরে উল্লেখিত সীমা অনেক আগে নির্ধারন করা হয়েছিলো এবং সময়ের সাথে সাথে খরচের পরিমান বেড়ে গেলেও তা আর বাড়ানো হয়না। বর্তমান সময়ে বছরে ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে অফিসে যাতায়াত করাটা সম্ভব কিনা তা আমরা সবাই বুঝতে পারি। আমাদের আর হিসেব করার দরকার হয়না। এমন কিছু কিছু ক্ষেত্রে করমুক্ত সুবিধা বাড়ানো উচিত।
তবে তারা যে শুধু তাদের আয়ের উপরই বেশি হারে বা বেশি পরিমানে কর দিয়ে থাকেন তাই না, যেহেতু তাদের আয় বেশি তাই তাদের সম্পদের পরিমানও বেশি। তিন কোটি টাকার উপরে সম্পদ গেলেই একটা নির্দিষ্ট হারে সারচার্জ দিতে হয়। এর ফলেও উচ্চবিত্তদের করের পরিমান বেড়ে যায়।
এতসব হিসাব করা সত্যি জটিল। কিন্তু আপনি যদি bdtax.com.bd এর সফটওয়্যার ব্যবহার করেন তাহলে খুব সহজেই অতি অল্প সময়ের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনি নিজেই আপনার রিটার্ন প্রস্তুত করতে পারবেন। তাই আজই রেজিস্ট্রেশন করে প্রস্তুত করে ফেলুন আপনার আয়কর রিটার্ন।
জসীম উদ্দিন রাসেল
Leave A Comment