বাজেট করদাতাদের জন্য কি সুখবর নিয়ে আসছে তা জানার জন্য প্রতি বছরই তারা অপেক্ষায় থাকেন। গত বছর যখন ২৬ মার্চ থেকে মানুষ কার্যত ঘরে বন্ধি হয়ে পড়েন, তখন মানুষের আয় কমে যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রেই বন্ধ হয়ে যায়। দলে দলে মানুষ শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার চিত্রও প্রকাশিত হয়েছে।
এমন অবস্থায় ব্যক্তি করদাতাদের জন্য দুইটি সুখবর নিয়ে আসে বাজেট ২০২০-২১। আড়াই লাখ টাকা থেকে করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি করে তিন লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়। আর অন্য দিকে কর হার ১০% থেকে কমিয়ে ৫% দিয়ে শুরু হয়। করদাতারা খুশি হয়েছিলেন। তবে এই বছর বাজেট ২০২১-২২ তেমন কোন সুখবর নিয়ে আসেনি।
যাদের আয় বেশি তাদের করের পরিমান এবার বাড়বে। বাকি করদাতাদের গত বছরের মতই থাকবে। অর্থাৎ গত বছর আপনি যেভাবে আপনার আয়কর হিসেব করেছেন, এ বছরও একইভাবে করবেন।
তবে তিনটি ক্ষেত্রে টিআইএন নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ক্ষেত্রগুলো হলো, দুই লাখ টাকার উর্দ্ধে সঞ্চয়পত্র ক্রয়, দুই লাখ টাকার উর্দ্ধে পোস্টাল সেভিংস সার্টিফিকেট খুলতে এবং সমবায় সমিতির রেজেস্ট্রেশন নেওয়ার জন্য বাধ্যতামূলকভাবে টিআইএন নিতে হবে।
উপরে যেটা বলছিলাম, যেসব করদাতার আয় এবং সম্পদের পরিমান বেশি তাদের করের পরিমান এবার বাড়বে। গত বছর তিন কোটি টাকা নীট পরিসম্পদ অতিক্রম করলেই সারচার্জ দিতে হতো। এবছরও তাই রাখা হয়েছে। কিন্তু কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। গত বছর পর্যন্ত মোট সাতটি ধাপ ছিলো, এবার তা কমিয়ে পাচটি ধাপে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এবং সারচার্জের হারও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগে সর্বোচ্চ হার ছিলো ৩০%। কিন্তু এবার প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৫% পর্যন্ত। আর আগে যে ন্যূনতম সারচার্জ ছিলো তিন হাজার টাকা এবং পাচ হাজার টাকা, তা এবার তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরেকটা বড় পরিবর্তন হলো, তৃতীয় লিঙ্গের করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। মহিলা এবং ৬৫ বছর উর্দ্ধ করদাতাদের জন্যও করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা। অর্থাৎ এই সীমা অতিক্রম করলেই তৃতীয় লিঙ্গের করদাতাদেরকে কর দিতে হবে।
তবে করের পরিমান বৃদ্ধি পেলেও করদায় কমানোর উপায় হলো কর রেয়াত। আয়কর আইনে উল্লেখিত খাতে বিনিয়োগ বা দান করলে তা বিনিয়োগ ভাতা হিসেবে বিবেচিত হয়। এই বিনিয়োগ ভাতার উপর করদাতা একটি নির্দিষ্ট হারে কর রেয়াত পেয়ে থাকেন, যা তার মোট করদায় থেকে বাদ গিয়ে করের পরিমান অনেকাংশে হ্রাস করে থাকে। কিন্তু বিনিয়োগ ভাতা একজন করদাতা কতো পর্যন্ত দাবি করতে পারবেন তার একটি সীমা বেধে দেয়া হয়েছে আয়কর আইনে।
তিনটি অংকের মধ্যে যেটি কম হবে তাই হবে একজন করদাতার বিনিয়োগ ভাতা। তিনটি অংক হলো, করযোগ্য আয়ের ২৫% অথবা প্রকৃত বিনিয়োগ অথবা ১.৫ কোটি টাকা। এই তিনটি অংকের মধ্যে যেটি কম হতো তাই বিনিয়োগ ভাতা হিসেবে এতোদিন পর্যন্ত বিবেচিত হতো। কিন্তু বাজেট ২০২১-২২ এ ১.৫ কোটির পরিবর্তে ১ কোটির প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ বিনিয়োগ সুবিধা কমলো। কিন্তু এই বিনিয়োগ সুবিধা যাদের আয়ের পরিমান অনেক বেশি থাকবে তাদের জন্য কমলো। তাই অন্য করদাতাদের কর রেয়াত নির্ণয়ে প্রভাব পড়বে না।
এই হলো ব্যক্তি করদাতার জন্য পরিবর্তন। বুঝতেই পারছেন, খুবই কম পরিবর্তন এসেছে। তবে যখন অর্থ আইন পাস হবে তখনই আসলে বুঝা যাবে সত্যিকার অর্থে কি পরিবর্তন হয়েছে। তবে যারা bdtax.com.bd সফটওয়্যার ব্যবহার করে আয়কর রিটার্ন তৈরি করবেন তারা খুব সহজেই তাদের রিটার্ন তৈরি করতে পারবেন। আপনি আপনার আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের তথ্য বসালে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আয়কর রিটার্ন তৈরি হয়ে যাবে।
এছাড়াও এনবিআর কর্তৃক প্রবর্তিত একপাতার ফরম (আইটি ঘ ২০২০) অতি সহজে এবং খুব কম সময়ে bdtax.com.bd সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনার ট্যাক্স রিটার্ন প্রস্তুত করতে পারবেন।
তাই আজই আপনি এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করে রেজিশট্রেশন করতে পারেন।
জসীম উদ্দিন রাসেল
আয়কর পরামর্শক এবং প্রশিক্ষক
Good article
আপনাকে ধন্যবাদ। ঘরে বসে আপনার ২০২১-২০২২ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত করতে ভিসিট করুন https://bdtax.com.bd/index.php/user/registration/individual