কর দিবসের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হলে পূর্বের আয়কর আইনের (১৯৮৪) তুলনায় দ্বিগুণ হারে জরিমানা দিতে হবে। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপনার আয়কর রিটার্ন দাখিল করে বাড়তি জরিমানা পরিহার করার চেষ্টা করুন।
আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ বাতিল হয়ে এ বছর থেকে আয়কর আইন ২০২৩ বাস্তবায়ন হয়েছে এবং এর ফলে ব্যক্তি করদাতার আয়কর গণনাসহ ট্যাক্স রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কিছু পরিবর্তন এসেছে। আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ অনুযায়ী কোন ব্যক্তি করদাতা যদি কর দিবস অর্থাৎ ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হতেন তাহলে মাসিক ২% সুদ দিতে হতো। এই সুদ বকেয়া করের উপর গণনা করে রিটার্ন দাখিল করার সময় চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হতো।
কিন্তু আয়কর আইন ২০২৩ অনুযায়ী এখন থেকে ২% এর পরিবর্তে মাসিক ৪% করে সুদ দিতে হবে। এখানে উল্লেখ্য, কোন মাসের ভগ্নাংশও এক মাস হিসেবে বিবেচিত হবে। যেমন, কোন করদাতা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে পারেননি। পরে তিনি ডিসেম্বর মাসের ০৭ তারিখে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন তাহলে এক্ষেত্রে এক মাসের জন্য ৪% করে সুদ দিতে হবে। আবার ধরুন, কোন করদাতা জানুয়ারি মাসের ১৬ তারিখে রিটার্ন দাখিল করেছেন তাহলে দুই মাসের জন্য ৪% করে বকেয়া করের উপর সুদ দিতে হবে।
এখানে প্রশ্ন করতে পারেন, পূর্বের আইন অনুযায়ী কর দিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে না পারলে বর্ধিত সময়ের জন্য উপকর কমিশনারের কাছে আবেদন করার সুযোগ ছিল। নূতন আইনে সুযোগটি আছে কিনা ? উত্তর হলো: না।
একজন করদাতা ৪% সুদ দিয়ে যেকোনো সময় রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। তবে করদাতার বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত বা কর অব্যাহতি জনিত কোন আয় থাকলে তা থেকে বঞ্চিত হবেন ও উক্ত আয়ের উপরও নিয়মিত হারে কর প্রযোজ্য হবে।
যেমন, চাকুরিজীবীদের ক্ষেত্রে মোট বেতনের এক তৃতীয়াংশ বা ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে যেটি কম, সেটি কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয় হিসেবে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ উক্ত আয়ের উপর কোনো কর আসবে না। কিন্তু ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে উক্ত আয়ের উপর নিয়মিত হারে কর দিতে হবে। পাশাপাশি আয়কর রেয়াত থাকলেও দাবি করতে পারবেন না। আবার, কিছু আয় আছে যা আয়কর আইনে কর অব্যাহতির সুবিধা দেওয়া হয়েছে যেমন, আইটি সেবা থেকে প্রাপ্ত আয়। কিন্তু ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে কর অব্যাহতি বাতিল হয়ে সম্পূর্ণ আয়ের উপর নিয়মিত হারে কর দিতে হবে।
তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে কর দিবসের পূর্বে আয়কর রিটার্ন দাখিল করুন। এতে করে জরিমানার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
আইন পরিবর্তনের ফলে রিটার্ন তৈরি করা যদি আপনার কাছে জটিল মনে হয় তাহলে BDTax এর সাহায্য নিতে পারেন এবং ঘরে বসেই আয়কর দাখিলের প্রাপ্তিস্বীকারপত্র পেতে পারেন। তাই আর অপেক্ষা না করে এখনই রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন।
জসীম উদ্দিন রাসেল
Leave A Comment