একটি আয় বছরে একজন করদাতার বিভিন্ন উৎস থেকে আয় আসতে পারে। যেমন, যারা চাকরি করেন তাদের যেমন বেতন থেকে আয় আসে আবার যারা ব্যবসা করেন তাদের ব্যবসায় মুনাফা থেকে করযোগ্য আয় আসতে পারে।
তেমনি মূলধনী সম্পত্তি হস্তান্তর করে যদি কোন মুনফা আসে তাহলে আয়কর রিটার্নে তা মূলধনী আয় হিসেবে দেখাতে হয়। সাধারনত যাদেরই স্থাবর বা অস্থাবর মুলধনী সম্পদ রয়েছে তাদেরই মুলধনী আয় হতে পারে। যেমন, আপনি পাঁচ বছর আগে ঢাকাতে একটি পাঁচ কাঠার প্লট কিনেছিলেন দুই কোটি টাকায়। এ বছর তা বিক্রি করেছেন তিন কোটি টাকায়। তাহলে এখানে এই যে এক কোটি টাকা বেশি পেয়েছেন, এটাই হলো আপনার মূলধনী আয়। যার উপর একটি নির্দিষ্ট হারে কর দিতে হবে।
তবে সকল মূলধনী সম্পত্তি হস্তান্তর থেকে আয় মূলধনী আয় হিসেবে গণ্য করা হয় না। যেমন, ব্যক্তিগত ব্যবহারে জন্য গাড়ি, সোনা, আসবাবপত্র ইত্যাদি বিক্রি থেকে আয় মূলধনী আয় বহির্ভূত।
আপনি জানলেন কোনগুলো আপনার মূলধনী সম্পত্তি এবং কিভাবে তা থেকে আয় হতে পারে।
এরপর আপনি যখন মুলধনী আয় গণনা করবেন তখন আপনাকে এর ক্রয় মূল্য এবং বিক্রয় মূল্য বের করতে হবে। ক্রয় মূলের সাথে আপনি যদি কিছু খরচ করে থাকেন যা ঐ মূলধনী সম্পত্তির সাথে সরাসরি জড়িত তা আপনি মূলধনী সম্পত্তির সাথে যোগ করতে পারেন। যেমন, যদি কোন ট্যাক্স বা খাজনা দিয়ে থাকেন তাহলে তা ক্রয় মূল্যের সাথে যোগ হবে।
ঠিক তেমনি আপনি যখন বিক্রয় করবেন তখনও আপনি বিক্রয়ের সাথে যে খরচগুলো সরাসরি জড়িত সেগুলো বিক্রয় মূল্য থেকে বাদ দিতে পারবেন। যেমন, বিক্রয় করার জন্য যদি আপনি কোথাও বিজ্ঞাপন দেন তাহলে তার খরচ আপনি বিক্রয় মূল্য থেকে বাদ দিতে পারবেন।
এভাবে আপনি ক্রয় মূল্য এবং বিক্রয় মূল্য বের করার পর যদি দেখন আপনার বিক্রয় মূল্য বেশি তাহলে তাদের পার্থক্যই হবে মুলধনী আয়। যার উপর আপনাকে কর দিতে হবে।
তাহলে আপনি কিভাবে কর গণনা করবেন?
আয়কর আইনে মূলধনী আয়ের উপর কর গণনা করার জন্য দুইটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আপনার যে মূলধনী আয় হয়েছে তা যদি পাঁচ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে তাহলে সাধারন নিয়মেই আপনার কর গণনা করতে হবে। অর্থাৎ, অন্যান্য আয়ের সাথে মূলধনী আয় যোগ করে আপনি কর গণনা করবেন।
আর যদি পাঁচ বছরের পরে আপনার মূলধনী আয় হয় অর্থাৎ, আপনি একটা প্লট কিনেছিলেন ২০০০ সালে। তা বিক্রি করেছেন জানুয়ারী ২০১৯ এ এসে। তাহলে আপনার আয় গণনা করতে হবে দুইটি পদ্ধতি অনুসরণ করে।
প্রথমে উপরে বর্ণিত উপায়ে অর্থাৎ সাধারন নিয়মেই কর গণনা করবেন।
তারপর শুধু মূলধনী আয়ের উপর ১৫% ধরে কর গণনা করবেন এবং বাকি যে আয় আছে তার উপর সাধারন নিয়মে কর গণনা করবে। এই দুইটি করের পরিমান এবার যোগ করবেন।
তাহলে উপরে প্রাপ্ত দুইটি অংকের মধ্যে যেটি কম হবে সেটিই হবে আপনার এ বছরের আয়কর।
প্রতি বছর নভেম্বর মাসে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। যারা এখনো রিটার্ন তৈরির কাজ শুরু করেননি তারা এখনই শুরু করে দিন। আপনি খুব সহজেই bdtax.com.bd–তে রেজিস্ট্রেশন করে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই নিজের রিটার্ন নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন। তাই আর দেরি না করে আজই লগইন করুন এবং নিজেই তৈরি করে ফেলুন আয়কর রিটার্ন।
জসীম উদ্দিন রাসেল
Leave A Comment