যে সব সেবাগ্রহণে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে

/, Income Tax/যে সব সেবাগ্রহণে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে

যে সব সেবাগ্রহণে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে

করদাতার সংখ্যা বাড়ানো এবং যাদের ইটিআইএন (E-TIN) আছে তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করতে ২০২২-২০২৩” কর বর্ষে মোট ৩৮ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। পূর্বে যে সকল ক্ষত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক ছিল এখন তার জন্য রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে। 

চলনু জেনে নেয়া যাক কোন কোন কাজের জন্য আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবেঃ 

. ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ৫ লক্ষ টাকার অধিক ঋণ নিতে। 

. কোনো কোম্পানির পরিচালক বা স্পনসর শেয়ারহোল্ডার হতে।

. আমদানি ও রপ্তানির নিবন্ধন সনদ পেতে।

. সিটি করপোরেশন বা পৌর এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি বা নবায়ন করতে।

. সমবায় সমিতির নিবন্ধন নিতে। 

. বীমা বা সার্ভেয়ার হিসেবে তালিকাভুক্তি বা লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে। 

. সিটি করপোরেশন, জেলা সদরের পৌর এলাকা বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এলাকায় জমি, ভবন বা অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি, রেজিস্ট্রেশন, দলিল হস্তান্তর, বায়না বা পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দেওয়ার ক্ষেত্রে যদি চুক্তিমূল্য  ১০ লক্ষ টাকার অধিক হয়। 

. ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড নিতে হলে। 

. চিকিৎসক, ডেন্টিস্ট, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, খরচ ও ব্যবস্থাপনা হিসাবরক্ষক, প্রকৌশলী, স্থপতি বা সার্ভেয়ার বা যে কোনো পেশাদার সংগঠনের সদস্যপদ প্রাপ্তির জন্য। 

১০. মুসলিম বিবাহ ও তালাক আইনের অধীনে বিবাহ নিবন্ধক হিসেবে লাইসেন্স পেতে হলে।

১১. কোনো ব্যবসায়ী বা পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ পেতে হলে।

১২. ড্রাগ লাইসেন্স, অগ্নিনিরাপত্তা লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স প্রাপ্তি বা নবায়ন করতে হলে। 

১৩. আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্পের জন্য গ্যাস সংযোগ পেতে হলে। 

১৪. ভাড়ায় চালিত লঞ্চ, স্টিমার, মাছ ধরা জলযান, ট্রলার, কার্গো, কোস্টার এবং বার্জের জন্য সার্ভে সার্টিফিকেট পেতে। 

১৫. জেলা প্রশাসন বা পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ইট তৈরির অনুমতি পেতে। 

১৬. সিটি করপোরেশন বা জেলা সদর পৌরসভায় সন্তান বা পোষ্যকে আন্তর্জাতিক পাঠ্যক্রমের ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে বা জাতীয় পাঠ্যক্রমের অধীনে ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি করতে হলে।

১৭. সিটি করপোরেশন বা সেনানিবাস এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে।

১৮. কোনো কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটরশিপ বা এজেন্টশিপ পেতে।

১৯. অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে। 

২০. আমদানির উদ্দেশ্যে ঋণপত্র খুলতে। 

২১. ৫ লাখ টাকার বেশি পোস্টাল সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলতে।

২২. ১০ লাখ টাকার বেশি ক্রেডিট ব্যালেন্সসহ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে।

২৩. ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে। 

২৪. পৌরসভা, উপজেলা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন বা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে। 

২৫. মোটরগাড়ি, জমি, বাসস্থান বা যে কোনো স্থাবর সম্পদ সংশ্লিষ্ট অংশীদারিত্ব ব্যবসা করতে। 

২৬. কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন নেওয়ার সময়। 

২৭. সরকার বা সরকারি কোনো সংস্থা, করপোরেশন থেকে বেতনশিরোনামে মূল বেতন হিসেবে ১৬ হাজার বা তার বেশি টাকা পাওয়ার সময়। 

২৮. মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক উপায়ে অর্থ স্থানান্তরে কোনো কমিশন, ফি জাতীয় অর্থ পেতে।  

২৯. পরামর্শক, ক্যাটারিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, জনবল সরবরাহ বা নিরাপত্তা সেবা দিয়ে অর্থ গ্রহণ করতে।

৩০. সরকারের কাছ থেকে মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও) হিসেবে প্রতি মাসে ১৬ হাজার বা তার বেশি টাকা পেতে।  

৩১. বীমা কোম্পানির এজেন্সি হিসেব নিবন্ধন বা পুনর্নবীকরণ করতে।  

৩২. দুই বা তিন চাকা ছাড়া যে কোনো ধরনের মোটরগাড়ি নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়ন করতে।

৩৩. কোনো এনজিওকে বা মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির অধীনে কোনো মাইক্রো ক্রেডিট সংস্থার কাছে বিদেশি অনুদানে ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে।  

৩৪. ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কোনো পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে। 

৩৫. কোনো ক্লাবের সদস্যপদ পেতে চাইলে।  

৩৬. পণ্য সরবরাহ, চুক্তি সম্পাদন বা সেবা প্রদানের জন্য টেন্ডারের কাগজপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে।

৩৭. আমদানি বা রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ থেকে বিল অফ এন্ট্রি জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে।

৩৮. ভবন নির্মাণের জন্য রাজউকসহ চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন ও পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে। 

যে সব দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান থেকে এসব সেবা নেয়া হবে, সেসব প্রতিষ্ঠান যদি সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র না দেখে সেবা প্রদান করে , তাহলে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান করা হয়েছে। এছাড়াও টিআইএন সনদের পরিবর্তে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে ঠিকাদার বা সরবরাহকারীর কাছ থেকে ৫০% বেশি হারে উৎসে কর কেটে রাখার নিয়ম করা হয়েছে।

আয়করদাতাদের রিটার্ন দাখিলে উৎসাহিত করতে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমাদের অনেকের ভুল ধারণা আছে যে রিটার্ন দাখিল করলেই আয়কর দিতে হবে। আপনার করযোগ্য আয় না থাকলে আপনি শূন্য রিটার্ন জমা দিবেন সেক্ষেত্রে কোনো আয়কর প্ৰদান করতে হবে না। 

আয়কর সংক্রান্ত সেবা আরও সহজ করতে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে আয়কর প্রস্তুত ও জমা প্রদানের কাজটিও সহজ করে এনেছে BDTax যা একটি ওয়েব বেসড এপ্লিকেশন। এর মাধ্যমে আপনি সহজে এবং অল্প খরচে আপনার আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত করতে পারবেন। এছাড়াও যাদের ট্যাক্স সার্কেল ঢাকা সিটির মধ্যে অবস্থিত তারা আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত ও জমা প্রদানের কাজটিও টিম বিডি ট্যাক্স এর মাধ্যমে করে ফেলতে পারেন ঘরে বসেই। 

তাই আপনার আয়কর রিটার্ন সহজে ও কম সময়ে করতে চাইলে আজই রেজিস্ট্রেশন করুন।

 

লেখক 

খ: হাসান আল মেহেদী 

By | 2022-07-23T09:25:34+00:00 July 22nd, 2022|E-tin, Income Tax|0 Comments

About the Author:

Leave A Comment

*

Shares
error: Content is protected !!